আরশীনগর প্রতিবেদক,
সংবাদকে রোমাঞ্চকর করতে ভিত্তিহীন বা সঠিক তথ্যকে বাড়িয়ে বলাকে হলুদ সাংবাদিকতা বলে। এমন সব কথা বলা হয় যাতে এটি দৃষ্টিগ্রাহী ও নজরকাড়া হয়, যাতে মিডিয়ার পাঠক ও দর্শক বাড়ে। এসময় মানা হয় না সাংবাদিকতার রীতিনীতি। ‘
অ্যামেরিকার বিখ্যাত সাংবাদিক জোসেফ পুলিৎজার এক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে এই হলুদ সাংবাদিকতা সৃষ্টি করেন। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনেক সংবাদ করেছেন। কিন্তু সব ম্লান হয়ে যায় যখন তাকে হলুদ সাংবাদিকতার জনক বলা হয়। ১৮৯০ সালের পরে তিনি তার নিউইয়র্ক ওয়ার্ল্ড পত্রিকাকে নিয়ে উইলিয়াম র্যান্ডল্ফ হিয়ার্স্টের নিউইয়র্ক জার্নালের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। উভয়েই হলুদ সাংবাদিকতার পরিবেশ সৃষ্টি করেন। দুজনই পত্রিকার কাটতি বাড়াতে ঝুঁকে পড়েন কিছু কেলেঙ্কারির খবর, চাঞ্চল্যকর খবর, চটকদারি খবর বাড়িযে উপস্থাপন করার দিকে। পুলিৎজার একজন কার্টুনিস্টকে চাকরি দিলেন তার কাগজে। তার নাম রিচার্ড ফেল্টন ওউটকল্ট। তিনি ‘ইয়েলো কিড’ বা ‘হলুদ বালক’
নামে প্রতিদিন নিউইয়র্ক ওয়ার্ল্ডের প্রথম পাতায় সেরকম একটি কার্টুন আঁকতেন। তার মাধ্যমে সামাজিক অসংগতি বাড়িয়ে তুলে ধরতেন যা একদিকে চাঞ্চল্যকর হতো, অন্যদিকে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতো। ‘
উইলিয়াম র্যান্ডল্ফ হিয়ার্স্ট নিউইয়র্ক জার্নালের জন্য পুলিৎজারের ওই কার্টুনিস্টকে ভাগিয়ে নিলেন। এরপরও পুলিৎজার দমে যাননি। জর্জ চি লুকস নামের আরেক কার্টুনিস্টকে দিয়ে ‘ইয়েলো কিডস’ চালাতে থাকলেন। দু’জনই পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর জন্য চমকপ্রদ ভিত্তিহীন স্ক্যান্ডাল খবর ছাপা শুরু করলেন। পত্রিকার কাটতি ঠিকই বাড়লো কিন্তু এতে মানগত দিক থেকে সাংবাদিকতার ক্রমাগত ক্ষতি হতে থাকল। একটা নষ্ট পাঠক গোষ্ঠী গড়ে উঠল। যারা এসব সংবাদই প্রত্যাশা করত। এভাবেই জোসেফ পুলিৎজার এবং উইলিয়াম হিয়ার্স্ট দু’জনেই হলুদ সাংবাদিকতার দায়ে অভিযুক্ত এবং ইতিহাসে চিহ্নিত।
হলুদ সাংবাদিকতার কিছু বৈশিষ্ট্য:
. ঘটনার সঙ্গে অতিরিক্ত অংশ জুড়ে বড় আকারের ভয়ানক শিরোনাম করা।
. অডিও-ভিজুয়াল, ছবি আর কাল্পনিক নক্সার অপরিমিত ব্যবহার।’
. ভুল ধারণার জন্ম দিতে পারে এমন সাক্ষাৎকার ও বর্ণনা তুলে ধরা।’
. উদ্দেশ্যমূলক ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরে পক্ষপাতিত্ব করা
এই হলুদ সাংবাদিকতা এখন আর জনপ্রিয় নেই, চলে এসেছে ফ্যাক্ট চেক এর মতো ঘটনা। অনেক মিডিয়া এর মাধ্যমে সত্য ঘটনা কি ছিল তা তুলে ধরছে। তাই মার খাচ্ছে হলুদ সাংবাদিকতা।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।